নড়াইলের শ্লোক কিসসাঃ প্যাট প্যাট করিস না প্যাটে বড় জ্বালা, কুল খাতি খাইছি দোস্ত, তোরেও খাব
প্যাট প্যাট করিস না প্যাটে বড় জ্বালা, কুল খাতি খাইছি দোস্ত, তোরেও খাব
মূল গল্পঃ এক বেজি ও খ্যাঁকশিয়াল দুজনে বন্ধুত্ব পাতিয়েছে। একদিন তারা যুক্তি করলো কুল বরই খাবে। বেজি গাছে উঠে পেট ভরে কুল বরই খেলেও খ্যাঁকশিয়ালকে দিল দু’একটি। এতে শিয়ালের হয়ে গেল রাগ। পেট ভরে খাওয়ার জন্য বেজিও গাছ থেকে নামতে পারছে না।
তখন বেশি শেয়ালকে বলল, বন্ধু আমি কিভাবে নিচে নামবো ? তখন শেয়াল বলল, আমি গাল হা করছি আমার মুখের মধ্যে পড়ো! তখন বেশি তার মুখের মধ্যে পড়লে শেয়াল তাকে খেয়ে ফেলে! শেয়ালের পেট তখন বড় দেখায় হেঁটে যাচ্ছিল, পথের পাশে এক বুড়ি শাক-সবজি তুলছিল, সে শেয়ালকে দেখে বলে, ঐ শেয়াল তোর পেট এত মোট ক্যান? তখন শেয়াল বলল,
“প্যাট প্যাট করিস না,
প্যাটে বড় জ্বালা,
কুল খাতি খাইছি দোস্ত,
তোরেও খাব..”
এই বলেই সে বুড়িকে খেয়ে ফেলল। আবার পথ ধরে যেতে এক কিশোরীর সাথে দেখা শেয়ালের। কিশোরী বলল, ঐ শেয়াল তোমার পেট এত মোটা কেন? তখন শেয়াল একই কথা বলল,
“প্যাট প্যাট করিস না,
প্যাটে বড় জ্বালা,
কুল খাতি খাইছি দোস্ত,
তোরেও খাব..”
এই বলে সেই কিশোরী মেয়েকেও খেল! আবার কিছুদুর যাবার পর এক ছাগলের সাথে শেয়ালের দেখা। ছাগল শেয়ালের পেট মোটার কারণ জানতে চাইলে শেয়াল পূর্বের কথা বলে তাকেও খেতে চাইলো। তখন ছাগল বুদ্ধি করে বলল, তুমি আমাকে খেতে চাও তো একটু অপেক্ষা করো, আমি আমার বাচ্চাকে একটু দুধ খাইয়ে আসি। তখন শেয়াল বলল, ঠিক আছে যাও দ্রুত দুধ খাইয়ে আসো। এই বলে ছাগল কামারের দোকান থেকে শিং দুটো বেশ ধার দিয়ে শেয়ালের কাছে এসে বলল, ভাই আমাকে খাওয়ার পূর্বে তোমার পেটের তল দিয়ে একবার যাওয়ার সুযোগ দাও। তখন শেয়াল বলল, আচ্ছা যাও। এবার ছাগল শেয়ালের পেটের তলে গিয়ে ধারালো শিং দিয়ে গুতো দিলো… শেয়াল মরে গেল। আর সেইসাথে একে একে যারা পেটে ছিল সবাই বেরিয়ে আসলো এবং বেঁচে গেল।
সৌজন্যতাঃ বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা, নড়াইল।