প্রবাদ-প্রবচন

নড়াইলের প্রবাদ-প্রবচন (প্রথম পর্ব)

লোকসংস্কৃতির অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে প্রবাদ-প্রবচনও একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ব্যবহারিক প্রয়োজনেই সাধারণ মানুষ প্রবাদ-প্রবচন প্রয়োগ করে থাকেন। প্রবাদ-প্রবচনের থাকে রূপক ও অংলকার। যা গভীরভাবে বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়। আমাদের প্রত্যহিক জীবনের অভিজ্ঞতা হতেই প্রবাদের উৎপত্তি। এক একটি প্রবাদ অনেকখানি অভিজ্ঞতার নির্যাস।

নড়াইলের সংগৃহীত প্রবাদ-প্রবচন (প্রথম পর্ব)

১. অত গুড়ি (পরিমাণজ্ঞাপক) আইচ্ছোর না। (অর্থঃ ইচ্ছে করলেই সব করা যায় না)
২. আগলা পায় চিনে মলে না। (অর্থঃ অসতর্ক না থাকা)
৩. আবে ঢং নরে চিৎপটাং। (অর্থঃঅকর্মণ্য নারী)
৪. আপন শালা ভাত পায় না, ভাই বাড়ার বাল! (অর্থঃ স্বার্থপর অর্থলোভী)
৫. আমও গেলো ছালাও গেলো । (অর্থঃ বেশি চাইলে কিছুই পাওয়া যায় না)
৬. বোলে আমার প্যাটের ছাও, আমারে খাতি চাও। (অর্থঃ মুরব্বিদের সামনে শিশু কিশোরের অসামজ্ঞস্য কথার ক্ষেত্রে)
৭. আলো চাল দেখলি ছাগলের মুখ চুলকোয়! (অর্থঃ লোভী মানুষ যা পাই তাই গ্রহণ করে)
৮. আহেনা, আম্বলে না, বিয়েই তামুক খায়ে যাও। (অর্থঃ স্বার্থের খাতিরে অযাচিত আপ্যায়ন)
৯. উট্টিতি জোর নেই – কুট্টিতে জোর আছে । (অর্থঃ কর্মহীন মানুষ অর্থহীন কথা বলে)
১০. এমনি যায় না আবার ত্যানা প্যাচায় । (অর্থঃ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বোঝা চাপিয়ে দেয়া)
১১. ওজু কুলুকুল, নামাজ ফকাফক । (অর্থঃ লোক দেখানো ধর্ম পালন)
১২. কপালের যদি মারে গুদ, এক সের চালি তিন পোয়া খুদ । (অর্থঃ বিপদের সময় ধৈর্যহারার বক্তব্য)
১৩. কাঙ্গালের কথা বাসি হলি ফলে । (অর্থঃ সাধারণ লোকের বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ হলে গ্রহণ করা উচিৎ)
১৪. কাঁচির ধার আছাড়ে গেছে । (অর্থঃ অযোগ্য সম্মান পেলে-সেক্ষেত্রে ব্যবহৃত)
১৫. কাজ করার কেউ না- জাউ খাওয়ার গাইড়ে । (অর্থঃ অকর্মণ্য কিন্তু সুযোগ গ্রহণকারী)

 

তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা, নড়াইল।

error: Hi, কপি করার কি দরকার? আমাকে মেইলে জানান।