Site icon Narail Information

শালনগর ইউনিয়নের কিছু গ্রামের নামকরণ- লোহাগড়া, নড়াইল

কালনাঃ শত শত বছর আগে লোহাগড়া থেকে নবগঙ্গা উত্তর পূর্বদিকে প্রবাহিত কালনার কাছে মধুমতি নদীতে প্রবাহিত হতো। ধীরে ধীরে নবগঙ্গার এই অংশ ক্ষীণ হতে থাকে, দেখাতো খালের মত। স্থানীয় লোক তবু নবগঙ্গার গর্বে গর্বিত হয়ে বলত, “এটা খাল না নদী”। এই কথাটা সংক্ষিপ্ত হয়ে স্থাননাম হয় “খালনা”। এই খালনা শব্দটি পরবর্তীতে হয়েছে কালনা। কালনায় মুঘল আমলে সেনাফাঁড়ি বা থানা ছিল। এখানে ছিল নাওরাবন্দর। আজও কালনায় কয়েকটি প্রাচীন তেতুল গাছ ও যুদ্ধ জাহাজ বেঁধে রাখার বিশাল পাথরের স্তম্ভ দেখা যায়।

কামঠানাঃ স্থানটি কালনার পাশ্ববর্তী। সম্ভবত কালনা থানা শব্দ থেকে কালথানা। আরো পরে কালথানা থেকে কামঠানা স্থাননাম হয়েছে।

তেতুলিয়াঃ এখানে প্রথম বসতি স্থাপনকালে ছিল একটি তেতুলগাছ। গাছটি ছিল দ্বীপ বা দিয়ার উপরে। এইভাবে স্থাননাম হয় তেতুদিয়া। তেতুদিয়া থেকে স্থানের নাম হয়েছে তেতুলিয়া।

কুমারকান্দাঃ পূর্বে উল্লিখিত লোহাগড়া থেকে কালনায় গিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীর কান্দিতে যে গ্রাম গড়ে ওঠে সে স্থানই পরবর্তীকালে কুমারকান্দা। প্রথম দিকে স্থানটির নাম ছিল কুমিরেরকান্দা! এখানে নদীতে প্রচুর কুমির থাকত। কুমিরের কান্দা পরিবর্তিত হয়ে স্থানের নাম হয়েছে কুমারকান্দা। কুমার কান্দার নদীপথে মগ-ফিরিঙ্গী দস্যুদের আটক করার জন্য সুবাদার শায়েস্তা খাঁ পরিচালিত মুঘলবাহিনী কুমারকান্দায় গোপনে ওৎ পেতে থাকত।

পোদ্দারপাড়াঃ জনবসতির যে এলাকায় স্বর্ণালংকার প্রস্তুতকারী পোদ্দারেরা বসতি স্থাপন করে সেই স্থানের নাম হয় পোদ্দারপাড়া। পোদ্দারপাড়া পরে এইট স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামের মর্যাদা পায়।

চরকরফাঃ প্রাচীন জমিদার কিংবা জায়গিরদারদের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া জমিকে বলা হত কোরফা। কোরফা ফার্সি শব্দ। কোরফা নিয়ে যে এলাকায় কেউ বসতি স্থাপন করে সেই স্থানের নাম হয় করফা। করফার মূল অংশের চর অংশই চরকরফা নামে পরিচিতি পেয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ নড়াইল জেলা সমীক্ষা ও স্থাননাম- মহসিন হোসাইন।

Exit mobile version